বছরে ২০০০ টাকা আয়কর কারা দেবেন?
৭৫ ধারায় যাদের রিটার্ন জমা দিতে হবে তারা দিবেন ২০০০ টাকা।
আরও সহজে বলি।!
যে সব কাজের জন্য ট্যাক্স পেয়ার আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (TIN) থাকা বাধ্যতামূলক, গভীরভাবে ভেবে দেখুন বছরে ৪ বা ৫ লাখ আয় না থাকলে এসব কাজের স্বপ্নও কেউ দেখেন না। আপনার আয় নেই, আপনি কি ক্রেডিট কার্ড করতে পারবেন? ক্রেডিট কার্ড ইস্যুকারী প্রতিষ্ঠান আপনাকে ক্রেডিট কার্ড দেবেন না। আপনার গাড়ি আছে, ব্যাংকে ৫ লাখ টাকার বেশি লেনদেন হচ্ছে, সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে অথবা জায়গা বা বাড়ি আছে, বাচ্চা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ে, তবুও বলবেন আপনার করযোগ্য আয় নেই! প্রশ্ন হলো, আয় না থাকলে টিআইএন গ্রহণ করেছেন কেন?
এখনও সময় আছে, টিআইএন ক্লোজ করে ফেলুন। টিআইএন রেখে করযোগ্য ব্যবসা বা কার্যক্রম করবেন, অথচ বছরে মাত্র ২০০০ টাকা আয়কর দেবেন না! এমনটি অনেকেই করছে শুধু সরকারের বিরোধিতার খাতিরে বিরোধিতা অনেক তো হলো!
এবার একটু দেশের কথাও ভাবুন। কর দেবেন না, উন্নয়ন চাইবেন! উন্নয়নের টাকা আসবে কোথা থেকে?
টাকা পাচার একটি বড় সমস্যা। কিন্তু সময় এর সাথে সাথে সবকিছু ডিজিটাল লেনদেন এর মধ্যে চলে আসলে টাকা পাচার অনেক কমে যাবে।
তার জন্য সরকার আন্তরিক। এইবার ডিজিটাল লেনদেন এর উপর ফোকাস দেয়া হয়েছে। লেনদেন ডিজিটাল হলে পাচার অনেক কমে যাবে।
ইউরোপ আমেরিকার উন্নয়নের ইতিহাস পড়ে দেখেন। তাদের যখন উন্নয়ন এবং উন্নতি হচ্ছিল, তখন তাদের দেশে ও দুর্বৃত্ত এবং টাকা পাচারকারী ছিল।
আমাদের দেশে এখন টাকা পাচার হচ্ছে। কারা করছে? আমার ভাই, আপনার ভাই, আমার আপনার কাছের পরিচিত আত্মীয় তারাই করছে।
ক্ষমতায় থাকার জন্য সরকারকে অনেক জায়গায় ছাড় দিতে হয়। কিন্তু আমরা কি পেরেছি আমাদের নৈতিকতা ঠিক করতে? আমরা কি পেরেছি তাদেরকে বর্জন করতে যারা টাকা পাচার করে? আমরা তো তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়ে চুপ থাকি! তাদের বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে তাদেরকে উৎসাহ দেই দুর্নীতি করার জন্য।
বছরে সাড়ে ৩ লাখ টাকা মানে মাসে ৩০ হাজার টাকা আয় থাকলেই ন্যূনতম ৫০০০ টাকা আয়কর দেওয়া বাধ্যতামূলক।একজন রিকশাওয়ালাও মাসে ৩০ হাজার টাকা আয় করেন। ঢাকা শহরে এমন অনেক ভিক্ষুক আছেন, যার মাসিক আয় ৫০ হাজার টাকার বেশি। এমন পান দোকানদার আছেন, যার আয় মাসে ৩০ হাজার টাকার বেশি! এরা কেউ টিআইএন গ্রহণ করেন না এবং আয়কর দেন না। তাহলে যারা টিআইএন গ্রহণ করেছেন বা করতে বাধ্য হয়েছেন, তাদের মাসিক আয় নিশ্চয় ভিক্ষুক, রিকশাওয়ালা কিংবা পান দোকানদারের চেয়ে বেশি!
যেখানে তাদের ন্যূনতম ৫ হাজার টাকা কর দেওয়ার কথা, অথচ এতদিন পর তাদেরকে বছরে মাত্র ২ হাজার টাকা আয়কর দিতে বাধ্য করা হচ্ছে! এই কাজটি আরো আগেই করা উচিত ছিলো! আর যারা বিরোধিতা করছেন, তারা একবার ভেবে দেখেছেন কি, কার পক্ষে কথা বলছেন?
ও যারা শুরু মাএ House Wife তারা যদি কোন কারণে TIN নিয়ে থাকেন তাহলে তা বন্ধ করে দিন। খালি খালি ২০০০ টাকা জমা দেওয়ার কি দরকার?
১৮ কোটি জনগণের বিশাল জনসংখ্যা দেশ। কিন্তু রিটার্ন জমা দিয়েছেন মাএ ২৭ লক্ষ লোক। এইটা কি মানা যায়?
মনে করি সরকার এখনো অনেক সহনশীল আছে এবং স্টেপ বাই স্টেপ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
আইএমএফ এর লোনের শর্ত অনুযায়ী সরকারকে সামনে আরো কঠিন এবং কঠোর হতে হবে।
Leave a Reply